Monday, January 4, 2021

 

Ratan O Postmaster

Screenplay By Arka Pravo Ghosh & Suparna Polley

Adapted from the Short Story “Postmaster”, Written by Rabindranath Tagore






PIRATES COPY PRESENTS


POSTMASTER -  ARPANBANDHU MAJUMDER

RATAN-  PARVEEN KHATUN 


ARKA PRAVO GHOSH- CAMERA, LIGHT, DIRECT

AMRITENDU ROY- LOGSHEET, TOTALITY , CONTINUITY

SUPARNA POLLEY- COSTUME, MAKE-UP, CONTINUITY 

TUHINA BAG- SET, PROPS, CONTINUITY

( SHOOTING STILLS FOR ALL)


PLACE- KHYAMASHULI , MIDNAPUR

SHOOTING DATE- 7TH SEP TO 12TH SEP, 2019








SCENE 1


EXT: VILLAGE ROAD: CLOUDY AFTERNOON

    

নদীর জলে মেঘের ছায়ার hyperlapse , নৌকা দুলছে / over  the  tree , jimmy-jib shot. 

    গ্রামের top angle এএকটা pan shot. বৃষ্টি আসবে আসবে করছে এরকম b-roll . 

 একজন ধুতি পাঞ্জাবি পরা কলকাতার বাঙালি ছোকরা ছেলে একহাতে কার্পেটের ব্যাগ, ছাতা আর অন্য হাতে একটা ট্রাঙ্ক নিয়ে জমির আলপথ ধরে ধীরে ধীরে হাটছে। ধীর গতি নতমস্তকে সাবধানে পা ফেলছে ভেজা রাস্তায়। আকাশে ঘন কালো মেঘের জোয়ার আর তার সাথে বিদ্যুৎ এর বাড়বাড়ন্ত। বৃষ্টি আসবে আসবে করছে। একটি বিদ্যুতের আওয়াজের সাথে music (আমায় ভাসাইলি রে!) 

কাট টু জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে একজন ছুটে যাচ্ছে pov শট। একটা পুকুরের জলের ছায়াতে একজন ছুটে যাচ্ছে। wide reverse pull shot এ দেখা যাচ্ছে যে একটা গ্রামের মেয়ে দৌড়োচ্ছে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে। সাইড ম্যাক্রো প্রোফাইল শট এ মেয়েটার মুখ টা reveal হচ্ছে স্লো মোশন এ গানের সাথে বিট মিলিয়ে । 

কাট টু ওয়াইড শটে নদীতীরে সেই ছোকরা সব জিনিস নিয়ে কোনোরকমে একটা নৌকায় উঠছে। ছেলেটা সব জিনিস রেখে নৌকোর একদম সামনে গিয়ে বসছে। তারপর আস্তে আস্তে পেছন ফিরে দেখছে। মাঝি দাঁড় দিয়ে ঠ্যালা মেরে নৌকা ছেড়ে দিচ্ছে। বাইরে ঝড় উঠেছে আর তার সাথে ছেলেটার মনেও ঝড় উঠেছে। নৌকাটা যত ঘাট থেকে দূরে যাচ্ছে , ছেলেটার মুখচোখ শক্ত থেকে আস্তে আস্তে নরম হচ্ছে আর দূর থেকে নদীর ঘাটটা দেখে যেদিন ও প্রথম এই গ্রামে এসেছিলো সেই দিনটার কথা মনে পরে যাচ্ছে। music fade out. Dissolve to.



SCENE 2


EXT: RIVERBANK: EARLY MORNING


নৌকা টা  ধীরে ধীরে এসে ঘাটে লাগছে। ছোকরা ছেলেটি নৌকো থেকে নামছে খুব সাবধানে আর একজন গোমস্তা তাকে হাত ধরে নামাচ্ছে। একজন শ্রমিক জাতীয় লোক নৌকা থেকে ট্রাঙ্ক টা নিয়ে মাথায় তুলছে। ছেলেটি হাতের ব্যাগ আর ছাতা গোমস্তাকে ধরতে দিয়ে নামতে গিয়ে জলে পা পরে যাচ্ছে। গোমস্তা শ্রমিককে ব্যাগ দিয়ে এসে ছেলেটির হাত ধরে সাবধানে টেনে তুলছে। 


গোমস্তা

“ সাবধানে, দেখে পোস্টমাস্টার সাহেব। ধুতিটা ভিজে যাচ্ছে। “


পোমা

“ হে হে! আসলে ঠিক অভ্যেস নেই তো। চলুন।”


পোমা গোমস্তার কাছ থেকে ছাতা টা নিয়ে নিজের ধুতি-জামাকাপড় ঠিক করে নিয়ে একবার চারপাশ দেখে উত্তেজিত হয়ে বলছে,


পোমা

“কোনদিকে? “


গোমস্তা হাত দেখাচ্ছে, শ্রমিক সেদিকে চলতে শুরু করে। 



SCENE  3


EXT: PADDY FIELD, POND, FOREST: CONTINUOUS


জাম্প কাট এ ওয়াইড এ দেখা যাচ্ছে শ্রমিক ট্রাঙ্ক মাথায় আর ব্যাগ হাতে নিয়ে আগে আগে যাচ্ছে আর পিছনে পোস্টমাস্টার ছাতাটা লাঠির মতো করে হাতে  নিয়ে গোমস্তার সাথে গল্প করতে করতে যাচ্ছে। 


পোমা

“ নীলকুঠিটা কোনদিকে? “


গোমস্তা

“ ওইযে ঐদিকে বাবু। পোস্টাপিস টা ওই উল্টোদিকে। আর তার পেছনের জঙ্গলটা পেরোলেই আপনার আটচালা। “


পোমা

“ আটচালাতেই রান্নার ব্যবস্থা আছে তো না কি?”


গোমস্তা  

“ ওহঃ আপনাকে তো বলতেই ভুলে গেছি বাবু। আমাদের নীলকুঠির সাহেব পোস্টমাস্টারের দেখভালের জন্য একটা মেয়েকে রেখেছেন। “


পোমা 

“ মেয়ে মানে?”


গোমস্তা 

“ বাচ্চা মেয়ে বাবু। রতন নাম। খুব অভাগী গো বাবু। গত বর্ষায় বাপটা মাঠে কাজ করতে করতে বিদ্যুৎঝলকে মরে গেলো। সেই দুখ্যে মাটা বুক ফেটে মরে গেলো। তার কিছুদিন পরেই চিকিস্যের অভাবে ভাইটাও অসুখে মরে গেলো। তারপর ওই আমাদের নীলকুঠির সাহেবের বাড়িতেই থাকে। আপনার ঘরের সব কাজ ওই করে দেবে। আপনাকে কিচ্ছু চিন্তা করতে হবেনি।” 


পোমা

(অবাক/দুঃখ)

“ হুম!”


তারপর তারা গল্প করতে করতে একটা পানাপুকুরের ধার দিয়ে যাচ্ছে। পুকুরের কিছু শট। 


গোমস্তা ( একদিকে আঙ্গুল দেখিয়ে বলছে)

“ ওই যে বাবু, আপনার পোস্টাপিস।”


পোমা সেটা শুনে দাঁড়িয়ে যায়, দূর থেকে পোস্ট অফিস টা দেখছে।


গোমস্তা

“যাবেন নাকি বাবু একবার”?


পোমা “না” বলে  সামনে  এগিয়ে  যাচ্ছে। তারপর তারা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ( শুরুতে শ্রমিক , মাঝে  পোস্টমাস্টার  আর  পিছনে গোমস্তা )। 


Cut to.



SCENE 4            


EXT: ATCHALA: CONTINUOUS


গল্প করতে করতে তারা আটচালার সামনে এসে পৌঁছচ্ছে। আটচালার সামনের উঠোনে কয়েকটা বাচ্চা ছেলে মেয়ে খেলছে। গোমস্তাকে দেখে সব বাচ্চাগুলো দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। শ্রমিক তার মধ্যে দিয়ে গিয়ে ঘরের ভিতর ট্রাঙ্ক আর ব্যাগ টা  রেখে বেরিয়ে আসছে। বাচ্ছাগুলোর মধ্যে একজন মেয়ে শুধু দাঁড়িয়ে আছে। গোমস্তা গিয়ে মেয়েটাকে  নিয়ে  আসছে । শ্রমিক পোস্টমাস্টার কে নমস্কার করছে, পোমা  কিছু  বখশিশ দিচ্ছে, শ্রমিক সেটা  নিয়ে  কপালে  ছুঁয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।  সেই সময় পোমা জায়গাটা হালকা ঘুরে ঘুরে দেখছে। আর মেয়েটা মাথা নিচু করে চোখ তুলে পোমাকে দেখছে। 


গোমস্তা

“ পোস্টমাস্টার বাবু। এই হচ্ছে রতন। রতন ইনি হলেন পোস্টমাস্টার বাবু। তোকে সাহেব যেমন বলে দিয়েছেন তেমনভাবে দেখে রাখবি। বেশি বিরক্ত করবিনা কিন্তু। “


রতন হালকা লজ্জা পেয়ে মাথা নারে। আর পোমা আলতো করে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে ঘরের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে । 


গোমস্তা

“ আমি তাহলে আসছি পোস্টমাস্টার বাবু, কোনো দরকার পড়লে রতন কে বলবেন আমায় ডেকে দেবে।”


গোমস্তা চলে যাচ্ছে। রতন মাঝে দাঁড়িয়ে সেই চলে যাওয়া দেখছে। তারপর আস্তে আস্তে দরজার দিকে এগোচ্ছে। বাইরে থেকে দেখছে যে পোমা ঘরের ভেতর ট্রাঙ্ক খুলে জিনিস বের করতে করতে ঘর টা সাজিয়ে নিচ্ছে। রতন কিছুক্ষন চুপচাপ দাঁড়িয়ে দেখছে তারপর আস্তে আস্তে ঘরের ভেতর ঢুকছে। কাট টু। 



SCENE 5


INT: ROOM: CONTINUOUS


রতন ঘরের ভিতরে এসে টেবিলের কোনা ধরে দাঁড়াচ্ছে।

 পোমা রতন কে দেখতে পেয়ে একটা চাদর হাতে দিয়ে বলছে-


পোমা

“ পাততে পারবি? “


রতন কোনো কথা না বলে চাদরটা হাতে নিয়ে খাটিয়াতে পেতে দিচ্ছে। 


পোমা

“ রাতে আমি রুটি খাই আর সকালে দুবালতি তোলা জলে স্নান করি। “


রতন

“ তাহলে আমি এখন জল নিয়ে আসি। তার আগে ভাত বসিয়ে দেব? “


পোমা

“ চাল ডাল সব কেনা আছে?”


রতন

“ হা গো পোস্টমাস্টার সাহেব। এক সপ্তাহের জিনিস কিনে দিয়েছে ওই - “


পোমা (ডাক শুনে হেসে ফেলে বলে)

“ এত বড় নামে ডাকতে হবেনা। দাদাবাবু বলে ডাকিস তাহলেই হবে। স্নানের জল তা এনে দিয়ে রান্না টা বসিয়ে  দে তাহলে। খেয়ে একবার পোস্টাপিসটা ঘুরে  আসি “


 রতন ঘরের ভেতরেই রাখা দুটো বালতি নিয়ে চলে গেলো। পোমা সেই দিকে তাকিয়ে তারপর জানলার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। জানলা দিয়ে রতনের দুটো বালতি নিয়ে তাড়াহুড়ো করে চলে যাওয়া দেখছে, সেই জানলা দিয়েই পোমা  চলে যাচ্ছে, ক্যামেরা সেই ঘর ছেড়ে বাইরে এসে stable হচ্ছে, বাঁদিকে রতন দাঁড়িয়ে দেখছে পোমা যাচ্ছে, পোমা দূরে মিলিয়ে যাচ্ছে।

 কাট টু। 



SCENE 6


INT: ROOM: VILLAGE NIGHT


গ্রামের এক গোয়ালঘর থেকে ধোঁয়া উঠছে। ঝোপে ঝিল্লি ডাকছে। দূরে কোথাও থেকে বাউল গান ভেসে আসছে। হালকা হাওয়ায় গাছের পাতা নড়ছে। প্রদীপের আলোয় পোমা একটা বই পড়ছে। বই পড়তে পড়তে অন্যমনস্ক হয়ে কিছু ভাবছে।


পোমা

“ রতন। “


রতন বাইরে উঠোনে বসে রাতের আকাশ দেখছে। 


পোমা

“ রতন… “


রতন (বাইরে থেকে)

“ কি গা বাবু? ডাকছো কেন?”


পোমা

“ তুই কি করছিস?”


রতন

“ এখনই চুলো ধরাতে যেতে হবে… হেঁশেলের।”


পোমা

“ তোর হেঁশেলের কাজ পরে হবেখন - একবার তামাকটা সেজে দেতো। “


পোমা বইটা বুকের ওপর রেখে ছাদের দিকে তাকিয়ে বসে আছে। কিছুক্ষন পর রতন গাল ফুলিয়ে কলিকায় ফুঁ দিতে দিতে ঘরে ঢুকছে। বইটা পাশে সরিয়ে রেখে রতনের হাত থেকে কলিকাটা ফস করে নিয়ে জিজ্ঞেস করছে।


পোমা

“আচ্ছা রতন, তোর মাকে মনে পরে?”


রতন সেই কথার কোনো উত্তর না দিয়ে মাথা নিচু করছে। পোমা বোঝে যে হঠাৎ এই প্রশ্ন করা উচিত হয়নি। তাই পরিস্থিতি হালকা করার জন্য ও বলছে। 


পোমা

“ কলকাতায় আমার বাড়িতে কে কে আছে জানিস?”


রতন আগল কেটে কিছুটা উৎসাহিত হয়ে তাকাচ্ছে। 


পোমা

“ মা আছেন, দিদি আছে আর একটা ছোটভাই আছে। ভাইটা খুব চঞ্চল জানিস। সবসময় কিছু না কিছু ভাঙতে হবে তাকে।  দিদি অবশ্য খুব ভালোবাসে আমায়। তুই যদি আমার মাকে দেখ্তিস তাহলে বুঝতিস। মা মেয়ে খুব ভালোবাসে। তোকে খুব আদর করতো। “


রতনের চোখ ছলছল করে ওঠে। আস্তে আস্তে মাটিতে বসে বলছে। 


রতন

“ আমার একটা ছোটভাই ছিল। ওই যে পানাপুকুর, সেখানে আমরা  মিছিমিছি মাছ ধরা খেলতাম। আমার বাপ্ আমায় বেশি ভালোবাসতো। খুব আদর করতো। মাঠ থেকে ফিরে এসে সাঁঝবেলায়ে আমাকে আর ভাই কে কত্ত গপ্পো শোনাতো। কিন্তু একদিন আর  ফিরলো না বাপ্ টা মাঠ থেকে। ”


( বলতে বলতে রতন উদাস হয়ে যায়।  পোমা সেটা বুঝতে পেরে বলে ওঠে)


পোমা 

“দিদির কাছে আমি আর ভাই ছোটবেলায় কত্ত গল্প শুনেছি জানিস ? তোকে সেসব গল্প আমি শোনাবো।”


 রতন ( আবার খুশি হয়ে বলে )

“দিদিকে বুঝি একদম দুগ্গা মায়ের মতো দেখতে?”


পোমা 

“সে একরকম ঠিকই  বলেছিস। কিন্তু তুই কিকরে জানলি আমার দিদিকে কেমন দেখতে?” 


রতন 

“আমি ঠিক জানি। ”


পোমা ( হেসে উঠে )

“সে তো বুঝলাম।  কিন্তু কত রাত হলো খেয়াল আছে? খেতে দিবিনা ? আজ আর রাঁধতে হবে না।  সকালের তরকারিটা আছে না? তুই বরং চটপট খানকতক রুটি সেঁকে আন।” 


রতন তাড়াতাড়ি করে  উঠে চলে যায়।  পোমা আবার প্রদীপের আলোর কাছে গিয়ে বইটা নিয়ে পড়তে গিয়ে উঠে টেবিলে বইটা রাখছে। চেয়ার এ বসে একটা চিঠি লিখছে। dual superimpose - চিঠি লেখা/ রান্না করা। ( music কুল নাই কিনার নাই)

 কিছুক্ষন পর রতন কয়েকটা রুটি, আর তরকারি আর বেগুনভাজা নিয়ে ঘরে ঢুকছে। দুজনে খাচ্ছে আর খুব গল্প করছে। 


পোমা

“তুই  কিকরে জানলি রে আমি বেগুনভাজা ভালোবাসি? একদম আমার মায়ের মতো হয়েছে।”


রতন

“আমি ঠিক জানি।”


পোমা রতনের দিকে তাকিয়ে হাসছে।  camera  ধীরে ধীরে ঘরের বাইরে বেরিয়ে একদম পরিষ্কার ঝকঝকে আকাশে reveal  হচ্ছে। আর ওদের গল্পের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, সাথে ঝিল্লির ডাক। 

Dip to black




SCENE 7

ENT: DAOA : VILLAGE NOON :


      হালকা মেঘলা দুপুরে গ্রামের গাছপালা হাওয়ায় দুলছে। মাঝে মাঝে হালকা রোদ উঠছে আর কিছুক্ষন আগে হয়ে যাওয়া বৃষ্টির ফোটা ফোটা জল ঘাসের ডগায় ঝিকমিক করছে। দূর থেকে একটা পাখির একটানা ডাক শোনা যাচ্ছে। রতন পেয়ারাতলায় পা ছড়িয়ে বসে একটা কাঁচা পেয়ারা খাচ্ছে।  পোমা আটচালার দাওয়ায় বসে উদাস হয়ে তাকিয়ে আছে। একবার বই হাতে নিয়েও আবার রেখে দিচ্ছে। অনেক্ষন আগে রতনের দিয়ে যাওয়া হুঁকো একপাশে পরেই আছে।  আকাশে সূর্য আর মেঘের আনাগোনা লেগেই আছে।  পোমা সেদিকে দেখতে দেখতে একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ডাক দেয় , 


                                                           পোমা  

                                                          “ রতন ” 

                           

       রতন পেয়ারা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ছুটে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বলছে 


রতন 

“দাদাবাবু ডাকছো ?”


পোমা

“ তোকে আমি একটু একটু করে পড়তে শেখাবো। বস এখানে। ”


পোমা উঠে ঘরে গিয়ে ট্রাঙ্ক থেকে একটা স্লেট আর পেন্সিল নিয়ে আসছে। রতন কে সামনে বসিয়ে অ আ লেখা শেখাচ্ছে। পড়ানোর  B ROLL . ট্র্যাকআউট শট। কাট টু। 



SCENE 8


INT: ROOM (MIXED): NIGHT


বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে বারবার। বৃষ্টির শব্দ কানে তালা লাগিয়ে দিচ্ছে। রাতের অন্ধকারে পুকুরের জলে বৃষ্টি পড়ছে আর ব্যাঙ ডাকছে । ঘরের ভেতর প্রদীপের আলো হাওয়াতে কমছে বাড়ছে। প্রতিদিনের অভ্যেস মতো রতন স্লেট পেন্সিল নিয়ে ঘরে ঢুকছে। ঢুকে দেখছে যে পোমা বিছানায় চুপচাপ চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। পোমা ঘুমোচ্ছে ভেবে রতন ফিরে যাচ্ছে। সেই সময় পোমা ডাকছে। 


পোমা

“ রতন!”


রতন (এগিয়ে এসে বলছে)

“ দাদাবাবু ঘুমোচ্ছিলে?”


পোমা

“ শরীরটা ভালো বোধ হচ্ছে না - দেখ তো আমার কপালে হাত দিয়ে। “


রতন স্লেট  টেবিল এর ওপর রেখে পোমার কপালে হাত দিয়ে দেখছে। কপালে হাতের ছোয়া পেতেই পোমা হালুসিনেট করছে ওর মাকে। কম আলোয় আবছায়ায় দেখছে যে ওর মা কপালে পট্টি দিচ্ছে। হাত পা ধুয়ে দিচ্ছে। তারপর ঘর থেকে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে যাচ্ছে। রাতের অন্ধকারে বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে রতন দৌড়োচ্ছে গোমস্তাকে ডাকতে। তারপর দুজনে কবিরাজের বাড়ি যাচ্ছে। কবিরাজকে নিয়ে দুজনে ফিরে আসছে। ঘরের ভেতর সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। কবিরাজ বটিকা দিচ্ছে। গোমস্তা জল এনে দিচ্ছে। রতন মাথার পট্টি চেঞ্জ করছে। 

কবিরাজ চলে যাচ্ছে। কিছুক্ষন পর গোমস্তাও চলে যাচ্ছে। রতন বটিকা খাওয়াচ্ছে। তালপাতার পাখা দিয়ে হাওয়া করছে। এই গোটাটা একটা ট্র্যাকআউট শট এ ঘর থেকে বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে । 


SCENE 9


INT: ROOM: DAYLIGHT


রতন পোমার মাথার কাছে বসে তালপাতার পাখা দিয়ে হাওয়া করছে। জানলা দিয়ে সূর্যের আলো ঢুকছে। পোমা আস্তে আস্তে চোখ খুলছে। চোখ খুলে যাকে দেখছে তাকে ব্লার এ মা বলে মনে হলেও ফোকাস আসলে তাকে রতন দেখছে। হালকা হেসে বলছে। 


পোমা 

“ তুই কি সারারাত জেগে ছিলি নাকি রে ?”


রতন চোখ বুজে হাতে মাথা রেখে ঘুমোচ্ছিলো আর এক হাতে হাওয়া দিচ্ছিলো। দাদাবাবুর ডাক শুনে হাতের স্পিড বেড়ে গিয়ে ঘুম ভাঙলো। 


পোমা 

“ ঠিক আছে, ঠিক আছে, আর দিতে হবেনা হাওয়া।  আমি এখন যথেষ্ট সুস্থ আছি। আমায় একটু দুধ গরম করে দিয়ে তুই যা ঘুমো। “


এই বলে পোমা বিছানা থেকে উঠছে। উঠে দেখে যে বাইরে ওর স্নানের দু বালতি জল রাখা আছে। পেছন ফিরে দেখছে যে রতন বিছানা পরিষ্কার করছে। একটা হাসি দিয়ে পোমা স্নান করতে যাচ্ছে। কাট টু। 



SCENE 10


INT: ROOM: AFTERNOON

   

একদিন রতন দাওয়ায় বসে জোরে জোরে পড়ছে, পোমা পোস্টাপিস থেকে ফিরছে, রতন এর দিকে না তাকিয়ে ঘরে ঢুকছে, বাইরে বেরিয়ে হাত পা ধুচ্ছে, আবার ঘরে ঢুকে যাচ্ছে, 

 রতন দরজার আড়াল থেকে লুকিয়ে দেখছে যে পোমা চেয়ার এ বসে খুব মন দিয়ে কিছু একটা লিখছে। সেটা দেখে রতন নিজে নিজেই স্লেট নিয়ে বাইরে দাওয়ায় বসে জোরে জোরে পড়ছে। পোমা ভিতরে একটা চিঠি লিখছে। 

Dip to black 



SCENE 11


INT: ROOM: NIGHT


একদিন রাতেরবেলা রতন স্লেট পেন্সিল নিয়ে উত্তেজিত হয়ে ঘরে ঢুকে বলছে। 


রতন

“ দাদাবাবু! আমায় ডাকছিলে? “


পোমা

“ রতন কালই আমি যাচ্ছি। “


রতন

“ কোথায় যাচ্ছ দাদাবাবু? “


পোমা

“ বাড়ি যাচ্ছি। “


রতন

“ আবার কবে আসবে? “


পোমা (মুচকি হেসে)

“ আর আসবোনা। আমি বদলির জন্য দরখাস্ত দিয়েছিলাম, সেটা নামনজুর হয়েছে, তাই আমি কাজে জবাব দিয়ে কলকাতা ফিরে যাচ্ছি। “


রতন কিচ্ছু না বলে স্লেট পেন্সিল রেখে উনুন ধরাচ্ছে। মিটমিট করে প্রদীপ জ্বলছে।

ঘরের এক কোনে একটা সরার ওপর টিপ্টিপ্ করে জল পড়ছে। রতন অন্যমনস্ক হয়ে রুটি সেঁকছে। ঘোরের মধ্যে খেতে দিচ্ছে পোমাকে। পোমা খাচ্ছে আর রতন দেখছে একমনে। 


রতন

“ দাদাবাবু, আমাকে তোমাদের বাড়ি নিয়ে যাবে? “


পোমা (হেসে বলছে)

“ সে কি করে হবে? “

      রতন চুপ করে যাচ্ছে। কোনো কথা না বলে মাথা নিচু করে বসে থাকছে। কাট টু। 

SCENE 12


EXT: VILLAGE: NIGHT 


রাতে শুয়ে ছাদের দিকে তাকিয়ে রতন কানে শুধু ওই কথাটাই ভাবছে। হঠাৎ উঠে ওবাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। মাঝরাতে দুবালতি নিয়ে রতন আলপথ ধরে যাচ্ছে। পুকুর থেকে বালতি ভরে জল তুলছে। ভরা বালতি নিয়ে এসে ঘরের সামনে রাখছে। 



SCENE 13


INT: ROOM: CLOUDY AFTERNOON


রতন যেই চাদরটা প্রথম পেতেছিল সেই চাদরটাই শেষ গুছিয়ে ট্রাঙ্কে ঢুকিয়ে ট্রাঙ্ক বন্ধ করছে। মুখে কোনো কথা বলছেনা কিন্তু মুখে কষ্টের ছাপ স্পষ্ট। পোমা সেটা বুঝতে  পেরে বলছে। 



পোমা

“ রতন আমি গোমস্তাকে বলে দিয়ে যাচ্ছি। আমার জায়গায় যে নতুন আসবে তাকে বলতে সে যেন তোকে আমারি মতো যত্ন করে। আমি চলে যাচ্ছি বলে তোকে কিছু ভাবতে হবেনা। “


রতন আর থাকতে না পেরে কেঁদে ফেলে বলছে।


রতন

“ না না তোমায় কাউকে কিচ্ছু বলতে হবেনা। আমি থাকতে চাইনে আর এখানে।”


এইবলে রতন কাঁদতে কাঁদতে বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে। আর পোমা অবাক হয়ে রতনের এই ব্যবহার দেখছে। কাট টু। 



SCENE 14


EXT: UTHON: CONTINUOUS


রতন তুলসী বেদির সামনে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছে। পোমা সব জিনিস নিয়ে এসে রতনের সামনে দাঁড়িয়ে পকেট থেকে টাকা বের করতে করতে বলছে।


পোমা

“ রতন তোকে আমি কখনো কিছু দিতে পারিনি। এটা রাখ। এতে তোর দিনকয়েক চলবে।”


রতন কাঁদতে কাঁদতে পোমার পা ধরে মাটিতে বসে পরে বলছে। 


রতন

“ দাদাবাবু তোমার দুটি পায়ে পড়ি! তোমার দুটি পায়ে পড়ি দাদাবাবু। আমাকে কিচ্ছুটি দিতে হবেনা। তোমার পায়ে পড়ি গো। আমার জন্য কাউকে কিচ্ছু ভাবতে হবেনা। “


এইবলে রতন দৌড়ে  সেখান থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। পোমা রতনের কষ্টের মাত্রা বুঝতে পেরে চুপ করে যাচ্ছে। সব জিনিস নিয়ে রওনা দিতে যাচ্ছে। পেছন ফিরে আটচালাটা একবার দেখে নিচ্ছে।মিউজিক শুরু। কাট টু। 


SCENE 15


EXT: FOREST, RIVERSHORE: CONTINUOUS


রতন কাঁদতে কাঁদতে জঙ্গলের মধ্যে দৌড়োচ্ছে। হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হলো। হঠাৎ ও দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। চোখের জল মুছছে। এবার যেদিক দিয়ে দৌড়ে আসছিলো ঘুরে আবার সেদিকে দৌড়োচ্ছে। চোখের জল মুছছে। প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। রতন ঘাটে এসে দেখছে যে নৌকা নেই। রতন নদীর পার ধরে দৌড়োচ্ছে। কিছুটা দৌড়ে গিয়ে অনেক দূরে বৃষ্টির মধ্যে আবছা নৌকা দেখছে। নদীর জল পাড়ে এসে ধাক্কা মারছে। রতন জোরে জোরে দাদাবাবু দাদাবাবু বলে ডাকছে আর কাঁদছে। মাটিতে বসে পরে চিৎকার করছে। ক্যামেরা প্যান করলে নৌকার ছায়া বৃষ্টিতে মিলিয়ে যাচ্ছে। মিউজিক কন্টিনিউ হচ্ছে। টাইটেল ট্র্যাক শুরু হচ্ছে। 
























THE  END