Saturday, April 4, 2020

A day with Closed Curtain

কলেজের টাইমে কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দেখেছিলাম সিনেমাটা। যথারীতি মাথার ওপর দিয়ে গেছিলো। আজ কেন জানিনা খুব প্রাসঙ্গিক লাগছে। সিনেমাটির নাম "Closed Curtain".
ইরানিয়ান পরিচালকদের মধ্যে আসগার ফারহাদির পর আমি জাফর পানাহি আর কাম্বুজিয়া পাত্ৰভিকে রাখি। এই ডকুফিকশনটি আমাদের সমাজের কোন মানসিকতার পরিচয় দেয় জানিনা কিন্তু কিছু বিশেষ চরিত্রের মানুষের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে তা নিশ্চিত করে বলতে পারি। সিনেমাটি বানানো হয়েছিল এরম এক সময়ে যখন সেই দেশে সিনেমা বানানোটা পাপ হিসেবে ধরা হতো (এখনো কিছুটা হয় ) ।
২০১১ সালে "This is not a film" বানানোর পর পরিচালক জেল খেটে , ব্যান হয়ে আর থাকতে না পেরে কাস্পিয়ানের তীরে বসে নিজের জেঠুর ফেলে দেওয়া ফ্ল্যাটে লুকিয়ে লুকিয়ে ৩ জন ক্রিউ আর ৭ জন অভিনেতা আর একটি মিষ্টি কুকুর (প্রসঙ্গত তখন ইরানে কুকুর পোষাও অবৈধ ছিল) নিয়ে সিনেমাটি বানিয়েছিলেন। তারপর আবার জেল ও খেটেছিলেন সেই কারণে।
সাহিত্যিকের যেমন কলম হয় পরিচালকদের সেরম হয় ক্যামেরা। এই সিনেমাটি আমায় সেটা শিখিয়েছিলো। এই গল্পে ক্যামেরা, ক্যামেরাম্যান, সাউন্ডের লোক সবাই একটা চরিত্র। পরিচালক নিজেও একটা চরিত্র। একটা কথা বলতে খুব ইচ্ছে করছে যদিও সেটা spolier কিন্তু না বলে থাকতে পারছিনা। এই সিনেমায় এই সিনেমার গল্পটাই scriptwriter নিজে লিখছে সেই বাড়িতে লুকিয়ে থেকে আর সেটাই শুট হচ্ছে আমাদের সামনে , যেন আমরা সবাই মিলে একটা শুটিং করছি। রিয়ালিটি আর এবসার্ড কোথায় গিয়ে এক হয়ে গেছে ধরতে পারবেন না মাইরি। গল্প এমন কিছুই নয়, আমাদের পাঁচুদাও এর থেকে ভালো গল্প লেখে কিন্তু যে দেশে গল্প লেখাটাই অন্যায় সেই দেশে কেউ সাহস করে গল্প লিখছে তাও আবার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এই সাহসটাই যেন আমাদের ভেতরে একটা আগুন জ্বালায়।
আমার চেনা অনেকেরই সিনেমাটি ভালো লাগেনি, আমার যে বিশাল আহামরি লেগেছিলো তা নয়, কিন্তু যে পরিস্থিতিতে মানুষ নিজে বাঁচবে কিনা ঠিক নেই সেই অবস্থায় যে শিল্পই মানুষকে বাঁচতে শেখায় তার নিদর্শন এই সিনেমাটি। শেষ কয়েক মিনিট আপনাকে একসাথে কাঁদাবে, ভাবাবে আর রাষ্ট্রের বিরুধ্যে প্রতিবাদ করতে শেখাবে। কিন্তু সেই প্রতিবাদের ভাষা হিংসে নয় - শিল্প। আর সেই কারণেই আজ এই সিনেমাটি খুব প্রাসঙ্গিক। অন্তত আমার কাছে।

No comments:

Post a Comment