ভোলা - কিরে! কোথায় যাচ্ছিস?
হোলা - বাজারে ভাই! খবর কি তোর?
ভোলা - আর খবর! খবর আজকাল সবারই ভালো আবার সবারই খারাপ। ওসব ছাড়, তোর চাকরির খবর বল।
হোলা - চাকরি চাকরির জায়গায় আছে। কোনো উত্থানও নেই পতনও নেই। যেরম লাস্ট দেখেছিলি সেরমই আছি। তা তুই করিস কি আজকাল?
ভোলা - আমার আর কি বল, বাবার দোকানটার কথা মনে আছে?
হোলা - কেন থাকবেনা?
ভোলা - ওই দোকানটাই একটু সাজিয়ে গুছিয়ে বসেছি। খুব বড় কিছু নয়।
হোলা - তাই নাকি রে? সেতো ভালো খবর। কোনদিকে দোকানটা? কাকুর তো মুদির দোকান ছিল তাইনা?
ভোলা - আরে মুদির দোকানই তবে একটু মডার্ন ডেকোরেশন আরকি, ওই শপিং মলের মতো।
হোলা - আরে পাগলা করেছিস কি? তা দোকানটা কোনদিকে রে? তোদের বাড়ি ঢোকার মুখে যে গলিটা আছে সেটার একদম উল্টোদিকের গলিটা দিয়ে একটু এগোলেই তো? তাইনা? যাবো একদিন অবশ্যই।
ভোলা - হ্যা ঐদিকেই, আর একটু এগিয়ে গিয়ে। তা তুই বাজারে কি করতে যাচ্ছিলিস ?
হোলা - এই রে! একদম ভুলে গেছি দেখেছিস! তাড়াতাড়ি যেতে হতো আমাকে একটু।
ভোলা - আরে চল না, এগোই চল। আমিও ঐদিকটাতেই যাচ্ছিলাম।
হোলা - চল চল।
ভোলা - একটা কথা বলবো? মানে খারাপ ভাবে নিবিনা তো? আমি কিন্তু জাস্ট কিউরিওসিটি থেকে বলছি।
হোলা - তুই আবার কবে থেকে এত ফর্মাল হলি ভাই?
ভোলা - সেই বয়স কি আর আছে রে? এখন সব কথাই ভেবে বলতে হয়। যাইহোক তোর ব্যাপারে মানে তোকে নিয়ে একটা খবর শুনলাম, সেটা কি সত্যি? ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড!
হোলা - সত্যিও আবার মিথ্যেও। হে হে!
ভোলা - হাসিস না ভাই, যদি সত্যি হয় তাহলে তুই এখানে দাঁড়িয়ে হাসছিস কিকরে সেটাই তো আমার মাথায় ঢুকছেনা।
হোলা - তোরা স্কুলে আমার নাম হোলা কেন দিয়েছিলি মনে আছে?
ভোলা - ভাই তখন তুই হোলাই ছিলিস। ট্রাস্ট মি। সবার কথা বিশ্বাস করতিস, যে কেউ তোকে কেলিয়ে যেত। কিন্তু তার সাথে এই ঘটনাটার কি সম্পর্ক?
হোলা - সম্পর্ক আছে ভাই, বিশাল বড় সম্পর্ক আছে। সেই স্কুলের অভ্যেসটা আমি বড় হয়েও কাটাতে পারিনি। এখনো সবাই আমায় যখন তখন বোকা বানিয়েই যায়।
ভোলা - সেটা বলিসনা রে, তুই কিকরে জানবি বল, এই ঘটনাগুলোর সময় মানুষ বড়ই অসহায় হয়ে যায়। তোর জায়গায় যে কেউ থাকলে তার সাথে এটাই হতো। তুই নিজেকে এত দোষ দিসনা।
হোলা - কিন্তু আমার জায়গায় তো আমি নিজেই আছি রে। অন্য কেউ তো নেই। ছাড় আমি এই গলিতে ঢুকবো, তুই নিশ্চই সোজা যাবি?
ভোলা - হ্যা এইতো আমারও সামনেই কাজ। ভালো থাকিস ভাই। মনকে শক্ত রাখ। বয়স এমন কিছুও বেশি হয়নি তোর। এখনও সময় আছে। টাটা!
হোলা - টাটা ভাই!
.
.
.
ভোলা - এ ভাই হোলাকে মনে আছে তোদের?
খোলা - ওই উদগান্ডুটা তো? হ্যা হ্যা! মনে থাকবেনা কেন?
ভোলা - ওর বৌ ভেগেছে শালা ওর দাদার সাথে।
খোলা - আরে আমিও শুনেছিলাম কিন্তু বিশ্বাস হয়নি।
ভোলা - আমারোতো বিশ্বাস হয়নি ভাই, এই জাস্ট ওর সাথে দেখা হলো, ওর নিজের মুখ থেকে শুনলাম, একদম সত্যি কথা।
খোলা - সিরিয়াসলি? এরম ও হয়? শেষ এ ভাসুরের সাথে ভাগলো? বিয়ে কতদিন হলো যেন ওদের?
ভোলা - এইতো ২ বছর মতো।
খোলা - ২ বছর ধরে তারমানে ভেতরে ভেতরে ওসব চলছিল আর কেউ শালা টেরও পেলোনা?
ভোলা - আর হোলা তো আমাদের হোলাই আছে, একটুও বদলায়নি, এরম ছেলেপুলেগুলোর সাথে এরমই হয়।
খোলা - ঠিক রে। লাগাম অলটাইম নিজের হাতে রাখতে হয় ভাই, নইলে এরম কেস যখন তখন যে কেউ খেতে পারে।
ভোলা - তুই আমার জিনিসগুলো দিয়ে দে, দোকানে আজ আবার সবাই আসেনি কাজে, ফিরতে হবে।
.
.
.
ভোলা - তোমার দেওয়া খবরটা সত্যি। আজ জয়ন্তর সাথে দেখা হলো রাস্তায়, আমি চেপে রাখতে না পেরে বলেই ফেলেছি। ও নিজে স্বীকার করেছে।
ভোলার বৌ - বলেছিলাম। তা শুধু ভাসুরকে নিয়েই ভেগেছে না গয়নাগাটি, টাকাপয়সা সব নিয়ে ভেগেছে?
ভোলা - এইরে সেটাতো জিজ্ঞেস করিনি। আচ্ছা আমি পরে জেনে নেবো।
ভোলার বৌ - আরে আসল কথাটাতো জিজ্ঞেস করবে নাকি, তো শুনলেটাকি? শুধুই ভেগেছে?
ভোলা - ওই আর কি, ওগো শুনছো! তুমি পালালে কার সাথে পালাবে গো?
ভোলার বৌ - যে পালিয়ে নিয়ে যাবে তার সাথেই পালাবো। তোমার সাথে সংসার করার থেকে যে কারোর সাথে ঘর করা ভালো।
ভোলা - তা অবশ্য তুমি ঠিকই বলেছো। হে হে! কিন্তু কে নিয়ে যাবে তোমায়?
ভোলার বৌ - জয়ন্তর ভাসুরের মতো লোক কি কম আছে নাকি পৃথিবীতে? পৃথিবী ছাড়োনা, আমাদের পাড়াতেই কি কম আছে নাকি?
ভোলা - অমনি সব দোষ ভাসুরের হয়ে গেলো না? মেয়েটাতো যেন কিছু জানেইনা, ভাসুর ওকে কিডন্যাপ করে নিয়ে গেছে, দুধের শিশু আমার। যত্তসব, রাখো তো ওসব ফালতু কথা।
ভোলার বৌ - আহা আমি কখন বললাম যে মেয়েটার দোষ নেই, মেয়েটার দোষ তো অবশ্যই আছে, কিন্তু এসব ক্ষেত্রে ছেলেরা সাহস না দিলে মেয়েরা আগে কিছু করেনা। পাকা কথা বলে দিলাম আমি যাও।
ভোলা - আচ্ছা বাবা ঠিক আছে যাও এবার, নিজের কাজ করো, রাত বাড়ছে, খিদে পেয়েছে।
ভোলার বৌ - যাচ্ছি যাচ্ছি দাড়াও, শুধু তো ভাত করতে হবে, এত চিন্তা করছো কেন?
ভোলা - ধুর!
ভোলার বৌ - এত চিন্তা কোরোনা প্লিজ, আমি কারোর সাথে ভাগবোনা, ভেগে যাওয়ার হলে এতদিন ভেগে যেতাম। আর তাছাড়া পাড়াতে সেরম কেউ নেই যার সাথে ভাগব, হে হে!
ভোলা - ধুর!